ডিস্ট্রিবিউটরগণ যেভাবে ব্যবসার পরিকল্পনা গঠন করবেন- ৪

যে কোন কাজের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে সঠিক পরিকল্পনার উপর। কাজ ও সময়ের উপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা গঠন করা যায় দু উপায়ে যেমনঃ স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ ব্যক্তিগত ও দলীয় লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা অনেক বেশি ফলপ্রসু হয়। স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় এক হতে তিন মাসের মধ্যে আবার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় ছয় হতে এক বছর সময় হাতে রেখে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিম্নলিখিত ধাপসমূহ অনুসরন করলে সাফল্য অর্জন বহুলাংশে ফলপ্রসু হয়ে থাকে।

ক) পছন্দসই কাজ বা ব্যবসাটি বাছাইকরনঃ
পরিকল্পনার প্রথম ধাপে আপনাকে পছন্দের কাজটি বেছে নিতে হবে। বিক্রয়কর্মী হিসেবে যে প্রতিষ্ঠানে আপনি কাজ করতে ইচ্ছুক সে প্রতিষ্ঠানের পণ্য সামগ্রীর ধরন, কমিশন প্লান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি পর্যবেক্ষন করে সিদ্ধান্তগ্রহন করুন।
খ) লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করুনঃ
লক্ষ্য নির্ধারন ব্যতীত কোন কাজটিই সফল সম্পন্ন হয় না। লক্ষ্য নির্ধারন ও এর প্রতিষ্ঠা ছাড়া পরিকল্পনা গঠন করা যায় না। লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার জন্য একজন ডিস্ট্রিবিউটর বা বিক্রয়কর্মী হিসেবে আপনাকে কিছু প্রশ্নউত্তর খুঁজে নিতে হবে। যেমন-
-১ আপনি কি করতে যাচ্ছেন?
-২ আপনি কোথায় করতে যাচ্ছেন?
-৩ আপনি কিভাবে করতে যাচ্ছেন?
-৪ আপনি কেন করতে যাচ্ছেন?
এ জাতীয় কিছু প্রশ্ন তৈরী করে নিজে এর সঠিক উত্তর সংগ্রহ করুন, এতে আপনার কাজের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা সহজতর হবে। ব্যবসা সম্পর্কিত যেসব প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা আপনার মনে প্রথমে আসবে লিপিবন্ধকরে সমাধান বের করে নিন। এতে পরিকল্পনা প্রসু্ততে অনেকবেশি অগ্রগামী হতে পারবেন।
গ) কাজের পরিবেশ নিরীক্ষা করুনঃ
আপনার ব্যবসাটি বাছাই করার পর লক্ষ্য প্রতিষ্টা করে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চাচ্ছেন সে প্রতিষ্ঠানের কর্ম পরিবেশ নিরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সচরাচর দেখা যায় পিরামীড স্ক্রীম, মানিগেম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন শ্রেনীর লোকের সমাগম হলেও সুষ্ঠ কাজের পরিবেশ থাকেনা। কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে চলমান নেটওয়ার্ক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান সমূহে কাজের সুন্দর পরিবেশ বজায় থাকে। শিক্ষামূলক ও প্রেষনাদায়ক কাজের পরিবেশ নতুন ও পুরাতন সকল ক্রেতা ও বিক্রয়কর্মীদের কাজের প্রতি উৎসাহী করে তোলে। এজন্য পরিকল্পনা গঠনের প্রাক্কালে কাজের পরিবেশ নিরীক্ষা আবশ্যক।
ঘ) সময় নির্ধারন করুনঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সময় নির্ধারন গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে পার্ট টাইম কিংবা ফুলটাইম ব্যবসা করার সুযোগ থাকে। নেটওর্য়াকার হিসেবে নিজের কাজের পরিধি ও প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে ফিল্ডওয়ার্ক ও অফিস টাইম এ দুটো ভাল করে নিন। পরিকল্পনা গঠনের প্রাককালে সময় ব্যবস্থাপনা বা সময় বন্টন। নির্ধারন এ জন্যই প্রয়োজনীয় যে সঠিক সময়ে সঠিক কাজ ও সময়ের মূল্যায়ন ব্যতীত সফলতা অর্জন অসম্ভব কিভাবে সময় বন্টন করবেন এ্‌ বিষয়ে একটি ছক তৈরী করুন। ছকটি নির্ভর করবে আপনি সারাদিন না ফুলটাইম প্রদান করবেন না পার্টটাইম করবেন। আবার একজন সিনিয়র ডিস্ট্রিবিউটর বা লিডারের সময় নির্ধারন ও একজন নতুন ডিস্ট্রিবিউটর বা ক্রেতার পরিকল্পনা একই ধরনের হবে না।
ঙ) প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করুনঃ
পরিকল্পনার এ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহ ও এর সংরক্ষন করতে হবে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বলতে আমরা সাধারণত পণ্য তালিকা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ সময়সূচী, কমিশন প্লান কাগজ-কলম, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদি বুঝে থাকি। আপনার কোম্পানী যে পণ্য সামগ্রী বা সেবা নিয়ে ব্যবসা করছে তার নমূনা (পারতপক্ষে) সংগ্রহ করনি। পাশাপাশি কোম্পানীর বিক্রয়ত্তোর সেবা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা রাখুন। এছাড়াও নতুন ক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটরদের পরামর্শ প্রদান কাজ বন্টন, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরীর জন্য যেসব উপকরন প্রয়োজন তা হাতের কাছে রাখুন। মনে রাখতে হবে অপ্রয়োজনীয় মুহূর্তে সকল সরঞ্জাম প্রদর্শন ক্রেতা ও অতিথিদের মনে ইতিবাচক সাড়া ফেলে।
চ) বাজেট নির্ধারনঃ
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান বাজেট নির্ধারন পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ প্রদানে সহায়ক হয়। অফিসিয়াল দ্রব্যদির খরচ, গ্রুপ বা টীমের যাবতীয় খরচ নির্বাহের জন্য আর্থিক বাজেট নির্ধারন করতে হবে। নতুনদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করানোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রেষনা হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে সিনিয়র বা লিডারদের পরামর্শ গ্রহন ফলপ্রসু হয়।
( চলবে )

No comments:

Post a Comment