বাংলাদেশে জরায়ু মুখের ক্যানসার বেশি হয় কেন?

বাংলাদেশে জরায়ু মুখের ক্যানসার বেশি হয় কেন?
জরায়ু মুখের ক্যানসার নারীদের ক্ষেত্রে খুব প্রচলিত। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৪৬৬তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. আফরোজা খানম। বর্তমানে তিনি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের গাইনি অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

প্রশ্ন : জরায়ু মুখের ক্যানসার প্রচুর নারী
বাংলাদেশে আক্রান্ত হচ্ছে, এর কারণ কী?
উত্তর : আমাদের দেশে দেখা যায় মেয়েদের খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেমন: ১২-১৩ বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয় অনেকে। আমরা অনেক সময় ক্যানসার ইনস্টিটিউটে হিসাব করে দেখি ৯-১০ বছরে অনেককে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। এটা এক নম্বর কারণ। এত কম বয়সে বিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।
দুই নম্বর কারণ হলো, এত কম বয়সে তাদের বিয়ে হচ্ছে। আবার খুব দ্রুত তাদের বাচ্চা হয়ে যাচ্ছে। এবং সেই সন্তান একটা থেকে আরেকটা হওয়ার ক্ষেত্রে বিরতি নেই। একেকজনের ক্ষেত্রে হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে যে পাঁচটি-সাতটি করে বাচ্চা হচ্ছে। দুই বাচ্চার মাঝে বিরতি কম। তার শরীরের যে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, সেটাই তৈরি হতে পারছে না।
তিন নম্বর কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করতে যে খাওয়াদাওয়া করতে হবে, সেটা নেই। আমাদের দেশের মেয়েরা প্রচুর পুষ্টিহীনতায় ভোগে। শারীরিক পুষ্টির দিকে অধিকাংশের কোনো খেয়াল নেই।
এ ছাড়া এক্সট্রা মেরিটাল রিলেশনশিপ যাদের থাকে, একাধিক সঙ্গী যাদের থাকে তাদের এই সমস্যাটা হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
চার নম্বর হলো, আমাদের দেশের মানুষদের সচেতনতার খুবই অভাব। 

প্রশ্ন : নারীদের প্রজননতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষাও যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে ক্যানসার হতে পারে কি?
উত্তর : আসলে প্রজননতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে গেলেই তো বিয়ের বয়স থেকে তাকে চিন্তা করতে হবে। যদি কম বয়সে বিয়ে হয়, তার বৃদ্ধিটাই তো ঠিকমতো হলো না। সেখানে তার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, একটার পর একটা বাচ্চা হয়ে যাচ্ছে, এগুলোর দিকে তাদের কোনো খেয়ালই নেই। তার স্বাস্থ্যরক্ষা করতে গেলে তাকে আগে এর বৃদ্ধি ভালোভাবে করতে হবে। এরপর সে বিয়ে করবে। সচেতনতা এর মধ্যেই পড়ে যাচ্ছে। পরিচ্ছন্নতা আর পুষ্টি। এই দুটো জিনিস তাকে জানতেই হবে।
বিয়ের বয়স তিন বছর পার হওয়ার পর থেকে সে চেকআপে যাবে। কোনো অসুবিধা ছাড়াই সে চিকিৎসকের কাছে চেকআপে যাবে। নিয়মিত যেতে হবে। সেটা বেশির ভাগই যায় না। মনে করে যে, না আমার তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কাজেই আমি কেন যাব চিকিৎসকের কাছে। সমস্যা হলে তখন যাব। এই বিষয়টি পরিবর্তন করতে হবে। কারণ জরায়ুমুখের ক্যানসারটা একেবারেই প্রতিরোধযোগ্য। যে জিনিসটি প্রতিরোধযোগ্য সেটি হবে, এরপর আমি যাব, এই বিষয়টি সবাইকে ত্যাগ করতে হবে।

No comments:

Post a Comment