নেটওয়ার্ক মা‌র্কে‌টিং‌য়ে ফোনালা‌পের কৌশল: পর্ব-৪

বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে আমরা অতিথি বা নতুন ডিস্ট্রিবিউটরদের সহিত যোগাযোগ করতে পারি। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো টেলিফোন বা মু‌ঠো‌ফোন। মনের ভাব প্রকাশ করা ও কুশল বিনিময়ের অন্যতম পন্থা টেলিফোনিক আলাপ। আমরা নিম্নোক্ত কিছু বিষয়ের প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখব যা পরবর্তীতে সফলতা অর্জনে সহায়ক হবে।


১। নিজেকে তৈরী করে নিনঃ
মানসিকভাবে নিজেকে প্রথমে প্রস্তুত করে নিন যা আপনাকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ আত্নবিশ্বাসী না হলে আপনার ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে বেশি কি ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন তার একটি সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করুন এবং তা চর্চা করুন।

২। সঠিকভাবে স্ক্রিপট তৈরী করুনঃ
আলোচনার পূর্বে একটি স্ত্রিপট তৈরী করে হাতে রাখুন। টেলিফোন বা মোবাই‌লে আলোচনার সময় অনেক কিছু তাৎক্ষণিক আপনার মনে নাও আসতে পারে। এজন্য স্ক্রিপট উল্লেখিত পয়েন্টগুলো আলোচনায় সহায়ক হবে। সঠিকও নির্ভুল তথ্য দিয়ে স্ত্রিপট তৈরী করুন যাতে গ্রহীতা বিভ্রান্ত না হন।

৩। গ্রহীতার মনোযোগের প্রতি লক্ষ্য রাখুনঃ
যে উদ্দেশ্যে ফোন করেছেন তা যেন কোন অবস্থাতেই ভেস্তে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। এজন্য গ্রহীতা কতটুকু আগ্রহ বা মনোযোগ গিয়ে আপনার কথাগুলো শুনছে তার প্রতি সজাগ থাকুন। সাধারণত গ্রহীতা কোন কাজে ব্যস্ত থাকলে আপনার সুন্দর কথাগুলো ও তার নিকট বিরক্তিকর মনে হবে ফলে ব্যবসার ইতিবাচক দিকগুলো সে ভালোভাবে গ্রহন লাভ করতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে নিন এবং পরবর্তীতে আলোচনার প্রস্তাব জানিয়ে সৌজন্যতার সহিত বিদায় নিন। ফোনে কথা বলার সময় গ্রহীতাকে আগ্রহী মনে হবে যখন তখন সামনা সামনি আলোচনার প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিন।

৪। শুনতে অভ্যস্ত হউনঃ
নিজেকে ভালো শ্রোতা হিসেবে তৈরী করে নিন। আপনার পরিচিত জনের নিকট ফোন করার পর খুব স্বাভাবিক যে তিনি আপনার ব্যাপারে জানতে চাইবেন এবং তার নিজের সাফল্য ও সমস্যা আপনাকে শুনাতে চাইবেন। এতে তিনি দীর্ঘ সময় নিলেও তা আপনাকে ধৈর্য্য সহকারে শুনতে হবে। আপনার শোনার অনাগ্রহ তিনি যাতে কোন অবস্থায় বুঝতে না পারেন। সাধারণত মানুষ শোনার চেয়ে বলতে অভ্যস্ত, কিন্তু আপনাকে শুনার অভ্যস্ত হতে হবে। দ্বিমুখী আলোচনায় কোন প্রকার নেতিবাচক মনোভাব আপনার সাফল্যের অন্তরায়। এজন্য ইতিবাচক মনোভাব ও আলোচনা একান্ত প্রয়োজন।

৫। ধৈর্য্যশীল হউনঃ
সম্ভাবনাময় ক্রেতার নিকট ফোন করার সময় ধৈর্য্যশীল হতে হবে। সাধারণত প্রথমবার ব্যবসার বিষয় সম্পর্কে আপনি আলোচনার সুযোগ নাও পেতে পারেন। পূণরায় সময় চেয়ে নিন এবং সুযোগ বুঝে ব্যবসার সম্ভাবনার কথা বলুন। মনে রাখবেন যে শ্রোতা যত বেশি সময় নিবে আর কার্যক্রম তত ইতিবাচক হবে।

৬। কন্ঠস্বর ন্যায়সঙ্গত রাখুনঃ
বিক্রয়কর্মীদের ন্যায় কথাবার্তা থেকে বিরত থাকুন এবং সুল‌লিত ও কার্যকর কন্ঠস্বর বজায় রাখুন। গ্রহীতা (অতিথি) কে সুযোগ প্রদান করবেন এমন ধারনার চেয়ে তাকে সম্ভাবনাময় ব্যবসার পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রথম আচরন করুন আপনার কন্ঠস্বর ও কথাবার্তার- মাধ্যমে সম্ভাবনাময় গ্রাহক হয়তো বুঝে নিতে পারেন আপনি কোন ব্যবসার কথা বলছেন, এক্ষেত্রে আপনি ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করুন এবং আপনার কার্যক্রম দেখার আমন্ত্রণ করুন।

৭। বারবার ফোন করবেন নাঃ
আপনি প্রথমবার ফোন করে ব্যর্থ হওয়ার পর অর্থাৎ গ্রাহক সম্পূর্ণ নেতিবাচক মনোভাব প্রদর্শনের পর আপনি পূনরায় ফোন করবেন না। আপনি দ্বিতীয় কোন মাধ্যম ব্যবহার করে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং এমন পরিবেশ তৈরী করুন যাতে গ্রাহক নিজেই আপনাকে ফোন করে। এবার গ্রাহকের আগ্রহ যাচাই করে আলোচনায় বসুন। সম্ভাবনাময় গ্রাহকের সাথে আলোচনার পূর্বে প্রয়োজনে আপনার দল নেতার সহিত আলোচনা করে নিন।

৮। নেতিবাচক কথা বলবেন নাঃ
নেতিবাচক কথোপকখন আপনার সাফল্যের অন্তরায়। যখনি গ্রাহক নেতিবাচক মনোভাব পোষন করবেন তখনি যুক্তি দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করুন। সাধারণত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে না জেনে শুধু লোকমুখে শুনে অনেকে মন্তব্য করে। আপনি তাকে স্বচক্ষে দেখার ও বুঝার আমন্ত্রণ করুন তাতে গ্রাহক অধিকতর পজেটিভ হবেনা
( চলবে )

^
^
#নেটওয়ার্ক মা‌র্কে‌টিং,  ডি‌স্ট্রি‌বিউটর, @টেলিমা‌র্কে‌টিং, #মা‌র্কে‌টিং

No comments:

Post a Comment