প্রশিক্ষণ ও ব্যবসাপরিকল্পনা: পর্ব-১

প্রশিক্ষণের গুরুত্ব-
প্রশিক্ষণকে সফলভাবে কাজে লাগানোর উপায়-
যেভাবে মূল্যবান সময়কে কাজে লাগাবেন-
ডিস্ট্রিবিউটরগণ যেভাবে ব্যবসার পরিকল্পনা গঠন করবেন-
টেলিফোনে আলাপ করার কয়েকটি কৌশল-
নিজের প্রস্তুত করুনঃ সফল হউন-
সফল হওয়ার জন্য ডিস্ট্রিবিউটরদের যেসব গুণাবলী থাকা প্রয়োজন-
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ গ্রুপ বা-দলের সুবিধাসমূহ-
ব্যবসা ও মা‌র্কে‌টিং‌য়ে সফলতার জন্য এসব প্র‌তি‌বেদন পর্ব আকা‌রে নিয়‌মিত প্রকাশ করা হ‌বে। দেখ‌তে, পড়‌তে ও বুঝ‌তে নিয়‌মিত চোখ রাখুন 'DearBangla24'
ব্ল‌গে।

প্রশিক্ষণের গুরুত্ব
প্রশিক্ষণ সাফল্য অর্জনের মূল হাতিয়ার। কাজ সম্পাদনের জন্য লোকজনকে হাতে কলমে যে শিক্ষা প্রদান করা হয় তাকে প্রশিক্ষণ বলতে পারি। এডউইন বি ফিলিপেপার ভাষায় “প্রশিক্ষণ হলো একটি নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য লোকজনের যোগ্যতা, দক্ষতা ও গুনাগুন বৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়া।”
প্রশিক্ষনের মাধ্যমে লোকজনের কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে ক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটরদের কর্মদক্ষতা ও কৌশল বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া অত্যাবশক। এসব প্রশিক্ষণ হতে পারে প্রেষনামূলক প্রশিক্ষণ, বিক্রয় কৌশল সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, মনোভাব গঠনমূলক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। লক্ষ্য করা যায় নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতির সহিত সম্পৃক্ত ক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটররা ব্যবসার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করলেও প্রশিক্ষণ গ্রহনের ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ কেন জরুরী গুরুত্বপূর্ণ তা নিম্নের আলোচনা হতে ধারনা লাভ করতে পারি।

ক) নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান লাভের জন্যঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি বা মাল্টিলেভেল পদ্ধতির আওতা বেশ বড়। অত্যাধুনিক কমিশন প্লান ও পণ্য সামগ্রীর আবিষ্কারের ফলে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি প্রতিনিয়ত নতুন সংস্করনরূপে আসছে। সেমিনার বা দু’একটি প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা সম্ভব নয়। সারা বিশ্বব্যাপী হাজারো নেটওর্য়াকার, বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতা ও ডিস্ট্রিবিউটর এ ব্যবসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষনা করে আসছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশিক্ষণ ব্যতীত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কিত জ্ঞান লাভ করা প্রায় অসম্ভব।

খ) বিক্রয় কৌশল আয়ত্ত করাঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি বলতেই বিক্রয় ও বিপণনের বিষয় চলে আসে। একজন ক্রেতা কিভাবে পণ্য ক্রয় করবে গতানুগতিক বিপণন পদ্ধতিতে তা সবার জানা থাকলেও নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে পণ্য ক্রয় বা বিক্রয় কিছুটা ভিন্ন বিধায় এ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহন তাকে অনেক বেশি উৎসাহী করে তুলবে। আবার দীর্ঘমেয়াদী কমিশন লাভের জন্য যে সব কৌশল বা পরিকল্পনা গ্রহন করতে হয় তা প্রশিক্ষণ গ্রহন করে সহজে আয়ত্ত করা যায়।

গ) পণ্য সম্পর্কিত ধারণা লাভঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতি অনুসরনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সাধারণত নতুন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ পণ্য বাজারজাত করে। নতুন ও পরিবর্তিত পণ্যের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পণ্যের গুণাগুন, পণ্যের বৈশিষ্ট্য ও বিশেষত্ব সম্পর্কে ধারনা লাভের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করা প্রয়োজন। সাধারণত সব ধরনের পণ্য সামগ্রীর ব্যাপারে ক্রেতাদের জানা থাকেনা এবং অধিকাংশ পণ্যের গুণাগুন সম্পর্কে ধারনা থাকেনা। ডিস্ট্রিবিউটর ও লিডারদের সব পণ্য সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করা উচিত।

ঘ) মনোবল বৃদ্ধিঃ
যে কোন কাজের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে মনোবলের উপর। দৃঢ় মনোবল দ্বারা অনেক জটিল কাজ সহজে সম্পাদন করা সম্ভব। প্রশিক্ষণ গ্রহনের পূর্বে নেটওয়ার্ক পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারনা থাকেনা। যার দরুন এ সম্পর্কিত সব কিছুই অসম্ভব মনে হতে পারে। প্রশিক্ষণ গ্রহনের পর মনোবল বেড়ে যায় এবং কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সফলতা প্রাপ্তির জন্য মনোবল বৃদ্ধি আবশ্যক আর মনোবল বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ অপরিহার্য।

ঙ) মনোভাব পরিবর্তনঃ
মানুষ দু ধরনের মনোভাব পোষণ করে এক ইতিবাচক দুই নেতিবাচক মনোভাব। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে যারা নেতিবাচক মনোভাব পোষন করে তারা এ সম্পর্কে জানে না বলেই এমন মনোভাব প্রদর্শন করে। কিংবা তারা কিছুটা জানলেও প্রকৃত ব্যাপারটি জানেনা। যাদের মনোভাব ইতিবাচক তারা এ সম্পর্কে জানে কিংবা জানার আগ্রহ প্রকাশ করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য কিংবা ইতিবাচক মনোভাব গঠনের জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রশিক্ষণ এবং পাশাপাশি অধ্যয়ন। একজন ডিস্ট্রিবিউটর বা বিক্রয় প্রতিনিধি তার ডাউন-লাইন ডিস্ট্রিবিউটর বা ক্রেতাদের যত বেশি জানার সুযোগ করে দিবে সে তত বেশি ইতিবাচক মনোভাবের অধিকারী হবে।

চ) ব্যক্তিত্বের উন্নয়নঃ
উন্নত ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে নেতৃত্ব প্রদানে অগ্রগামী হওয়া সম্ভব। পুথিঁগত বিদ্যার্জন করে অনেকেই উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে না। বস্তুত উন্নত ব্যক্তিত্ব নেতৃত্ব প্রদানে ভূমিকা পালন করে না বরং সাফল্যের শীর্ষবিন্দুতে পৌছাঁতেও সাহায্য করে। ব্যক্তিত্ব অর্জন ও নেতৃত্বলাভের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি ও অনুপম ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে। বস্তুত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ সাফল্য অর্জনে অন্যতম হাতিয়ার রূপে কাজ করে। কোন প্রশিক্ষণই মানুষের বৃথা যায় না, যদি তা সঠিকভাবে আয়ত্ত করা যায়। মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করার কিংবা নিজের সমস্যা অনুধাবন করার শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার প্রশিক্ষ
( চলবে )

No comments:

Post a Comment