ঘরেই দিন বেল্টের কারখানা

বেল্ট বা কোমর বন্ধনী ছাড়া অনেকেই নি‌জে‌কে অসম্পূর্ণ ম‌নে ক‌রেন। এটা হ‌লো নিত্য‌দি‌নের চলার সঙ্গী। সারা বছরই এর সমান  চাহিদা থা‌কে, তাই বিক্রিও ভালো হয়। অল্প পুঁ‌জি‌তে ব্যবসায়ীক ভি‌ত্তি‌তে বে‌ল্টের কারখানা দেয়া খুবই লাভ জনক।
বেল্ট তৈরির একটি কারখানা করতে বেশি পুঁজির  প্রয়োজন হয় না। বাসায় খালি ঘর থাকলেই বেল্ট তৈরির ছোট কারখানা করা  যায়। প্রথম দিকে একাই শুরু করতে পারেন।
জিনজিরা, চকবাজার, ইসলামবাগ,  যাত্রাবাড়ী, বিবির বাগিচা, সায়েদাবাদ, রায়েরবাজারসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়  আছে বেল্টের ছোট-বড় অ‌নেক কারখানা। ব্যবসা শুরুর আগে
বেচা-বিক্রি আর কাঁচামাল  সংগ্রহের খোঁজখবর এসব কারখানা থেকেই নিতে পারেন।

কী কী লাগবেঃ
* কমপক্ষে আট ফুট বাই আট ফুটের একটি ঘর লাগবে,
* চামড়া অথবা রেক্সিন,
* আঠা,
* সেলাই মেশিন,
* বোর্ড কাগজ এবং
* ডাইস মেশিন ইত্যাদি।

বেল্ট যেভাবে বানানো হয়ঃ
বেল্ট হয় তিন রকমের। শুধু চামড়ার, চামড়া ও রেক্সিনের ও শুধুই রেক্সিনের।  চামড়ার বেল্টগুলো চামড়া কেটে সাইজ করে তার এক মাথায় বকলেস লাগালেই হয়ে গেল।  কখনো কখনো ডাইস মেশিনের ছাপ দিয়ে নকশা করা হয়। চামড়া-রেক্সিনের তৈরি বেল্টগুলোর ওপর দিকে থাকে চামড়া আর নিচের অংশে রেক্সিন। দুই পাশ সেলাই দিয়ে  বকলেস লাগালেই প্রস্তুত হয়ে যায়। আর রেক্সিনের বেল্টগুলোর কাজ হয় কয়েক  স্তরে। বেল্টের মাপমতো কাগজ কেটে তার দুই পাশে রেক্সিন দিয়ে মুড়িয়ে আঠা  লাগাতে হয়। তারপর সেলাই করতে হয়। সবশেষে বকলেস লাগিয়ে দিতে হয়। তবে  কম্পানির নাম খোদাই করতে চাইলে ডাইসের ব্লকে রেখে ছাপ দিতে হবে।

কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতিঃ
সেলাই মেশিন কেনা যাবে আট হাজার টাকার মধ্যে। আর ডাইস মেশিন কিনতে খরচ পড়বে  ১০ হাজার টাকা। আর প্রতিবার ডাইস বানাতে খরচ  হবে এক থেকে তিন হাজার টাকা।  এক গজ চার গিরা করে একেকটা চামড়া কেনা যাবে এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার  ৮০০ টাকার মধ্যে। একই মাপের রেক্সিন ৭০০ টাকা। বুক্কা বা কাগজের বোর্ড ৩০০  টাকা, তিন স্তরে বানানো বেল্টের নিচের অংশের চামড়ার দাম পড়বে ৫০০ টাকার  মতো। আঠা দুই কেজির বোতলের দাম ৭০০ টাকা।

কোথায় কোন কাঁচামাল পাওয়া যায়ঃ
বেল্ট তৈ‌রির কারখানার জন্য সব রকমের কাঁচামাল পাওয়া যাবে সিদ্দিকবাজার, নবাবপুর, চকবাজার, বংশাল বা রায়েরবাজারে। মেশিন কেনার জন্য যেতে হবে ঢাকার বংশাল অথবা ধোলাইখালে।

কাজ ও মুনাফাঃ
ঘ‌রে ব‌সে বেল্ট বানা‌নোর কারখানার মাধ্য‌মে সহ‌জেই অ‌ধিক আয় কারা যায়। একজন লোক দৈনিক ৫০টি বেল্ট বানাতে পারে। পাইকারিভাবে প্রতিটি চামড়ার বেল্ট  ১২০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়, রেক্সিন-চামড়ার বেল্ট বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০  টাকায়। আর শুধুই রেক্সিনের বেল্ট বিক্রি করা যায় ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। আর  প্রতিটি বেল্টেই ৩০ থেকে ৪০ টাকা লাভ থাকে।

প্রশিক্ষণ নেবেন যেখানেঃ
বেল্ট তৈ‌রির কারখানা দেয়ার জন্য প্র‌শিক্ষণ নেয়া ভালো। সরকারিভাবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন তিন মাসের একটি কোর্স করায়। চাইলে এখানে যোগাযোগ করে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
নকশা কেন্দ্র
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন,
১৩৭-১৩৮ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০।
ফোন : ৯৫৫৬১৯১-২, ৯৫৫৩২৯৩, ৯৫৫৩২০২
© Kalerkantho

^
^
বেল্ট তৈ‌রির নিয়ম, বেল্ট বানা‌নোর কারখানা, বেল্ট তৈ‌রির ব্যবসা

1 comment: