প্রশিক্ষণকে সফলভাবে কাজে লাগানোর উপায়: পর্ব-২

প্রশিক্ষণ গ্রহন করে তা যথোপযুক্ত কাজে লাগানোর মাধ্যমেই প্রশিক্ষণের সার্থকতা অর্জিত হয়। প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য হলো সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে কার্যসম্পাদন, পরিকল্পিত কর্মসূচী গঠন ও ফলাফল অর্জন। পরিকল্পিত উপায়ে সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ গ্রহন করে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করার জন্য নিন্মোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহন করা যায়।

১। ব্যবসা বা কাজ বেছে নিনঃ
প্রথম পদক্ষেপ হলো আপনার ব্যবসা বা কাজটি বেছে নেয়া। আপনি কোন ব্যবসা বা কোন কাজটি করবেন সেটির উপর নির্ভর করবে আপনি কোন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহন করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবসা নির্ধারনের পর প্রশিক্ষনগুলো বেছে নিতে হবে। প্রশিক্ষন গ্রহন করে ব্যবসা নির্ধারন করতে গেলে ব্যবসারম্ভ কখনো সম্ভব হয় না। অর্থাৎ লক্ষ্য
নির্ধারন করতে হবে এমন যে ‘আমি এ কাজ করবো বা যে কোন উপায়ে এ কাজ আমাকে করতেই হবে।’ নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে সেমিনার দেখে আপনাকে সাইন আপ-করতে হবে। এরপর ব্যবসাটির সফলতার জন্য যেসব প্রশিক্ষন প্রয়োজন তা পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে।

২। ব্যবসা বা কাজের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ প্রশিক্ষণগুলো বেছে নিনঃ
প্রশিক্ষণ অনেক ধরনের হতে পারে। যেমন- প্রেষণামূলক, বিক্রয় কৌশল সম্পর্কিত, নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষন, দলগঠন সম্পর্কিত প্রশিক্ষন ইত্যাদি। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে প্রথমেই মৌলিক প্রশিক্ষন গ্রহন অত্যাবশ্যক। এতে এ পদ্ধতি সম্পর্কে ব্যাপক ধারনা লাভ করা যায়। এরপর বিক্রয় কৌশল সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, লিডারশীপ প্রশিক্ষন এবং প্রেষনামূলক প্রশিক্ষনগুলো সম্পন্ন করতে হবে। আপনি প্রচলিত ধারায় ব্যবসা করছেন; এমতাবস্থায় সফলতা অর্জনের জন্য কোন কোন প্রশিক্ষন গ্রহন করতে হবে তা আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন। কিন্তু মৌলিক প্রশিক্ষন ব্যতিরেকে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে এগানো সম্ভব নয়। এ জন্য প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করার পর ব্যবসার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ প্রশিক্ষন সমূহ বেছে নিন।

৩। প্রশিক্ষনের বিষয়বস্তু লিপিবদ্ধ করুনঃ
প্রশিক্ষণ গ্রহনকালে প্রশিক্ষনের বিভিন্ন বিষয়গুলো লিপিবদ্ধ করে রাখুন। পরবর্তীতে যে কোন সময় তা প্রায়োজন হতে পারে। প্রশিক্ষণ গ্রহনকালে গভীর মনোযোগ দিন এবং যে বিষয়গুলো স্পষ্ঠ হয়নি তা ভালোভাবে জেনে নিন। যে কোন প্রশ্ন মনে জাগলে তা তাৎক্ষনিক প্রশিক্ষকের কাছ থেকে জেনে নিন এবং লিপিবদ্ধ করে রাখুন। কারণ, একজন প্রশিক্ষক জানেন কাজের কর্মসুচী কোন স্তরে গিয়ে কোন বিষয়টি প্রয়োজন হবে এবং সেভাবেই তারা সাজায়। এজন্য প্রশিক্ষনের মুহুর্তে আপনার নিকট কিছু বিষয় অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও লিখে রাখতে ভুল করবেন না।

৪। কাজে-কর্মে প্রশিক্ষনের বিষয়গুলো প্রয়োগ করুনঃ
যে বিষয়গুলো আপনি প্রশিক্ষন গ্রহনের মাধ্যমে আয়ত্ত করেছেন, তা প্রয়োগ করুন আপনার কাজে। যেমন আপনি বিক্রয় কাজে প্রশিক্ষন হতে যা আয়ত্ব করেছেন তা প্রয়োগ করুন, কিংবা সেল্‌স টিমকে নেতৃত্ব প্রদানের সময় প্রেষনার কৌশলগুলো প্রয়োগ করুন। কাজের সাথে প্রশিক্ষণের বিষয়গুলোর কৌশলগুলোর সঙ্গতি আছে কিনা তা তাৎক্ষনিক বুঝতে পারবেন। প্রশিক্ষণকালে আপনি যা কিছু শিখেছেন তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে আপনি যতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবেন ততটা সফল হবেন।

৫। কাজের মূল্যায়ন করুনঃ
প্রশিক্ষণ গ্রহনের পূর্বে আপনি অনেক কাজ করেছেন এবং প্রশিক্ষন গ্রহনের পরেও আপনি কাজ করবেন। একই ধরনের কাজ না হলেও তফাৎগুলো পরখ করে দেখুন। অর্থাৎ কাজের মূল্যায়ন করুন। প্রশিক্ষনের ত্যাৎপর্য বুঝতে পারবেন। প্রশিক্ষণ গ্রহনের পূর্বে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ যা কিছু অসম্ভব ছিল, অস্পষ্ট ছিল এবং কাজকে যত কঠিন মনে হচ্ছিল প্রশিক্ষনের পর তা বিপরীত মনে হবে কারন প্রশিক্ষণ মনোবল বৃদ্ধির হাতিয়ার।

৬। পূনঃপূনঃ প্রশিক্ষণ গ্রহন করুনঃ
যখন এটুকু নিশ্চিত হবেন যে, প্রশিক্ষনের দরুন আপনি সফল হচ্ছেন। তখন প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দিবেন না। কারন একই প্রশিক্ষণ যত বেশি করবেন তত বেশি সফলতা আসতে থাকবে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকার প্রশিক্ষণ গ্রহন করুন। আপনি যত বড় লিডার বা ডিস্ট্রিবিউটর হোন না কেন; এমনকি সফল প্রশিক্ষক হলেও প্রশিক্ষণ গ্রহনে কখনো দ্বিধা করবেন না। নতুন ডিস্ট্রিবিউটরদের জন্য প্রশিক্ষনের বিকল্প নেই। ডাউন-লাইন আপনাকে অনুসরণ করে কিংবা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে যতটুকু ধারনা লাভ করবেন, কয়েকটি প্রশিক্ষনে তা সবটুকু অর্জন করতে পারবেন। যে যত প্রশিক্ষন গ্রহন করবে, সে তত বেশি জ্ঞান লাভ করবে এবং যে যত বেশি জ্ঞান লাভ করবে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ সে তত সফলতা অর্জন করবে।
( চলবে )

^
^
#সফল প্রশিক্ষণ, নেটওয়ার্ক মা‌র্কে‌টিং, ব্যবসা ও প্র‌শিক্ষণ‌কে কাজে লাগানোর উপায়

No comments:

Post a Comment